তিন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিবেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। করোনা ২০১৯ সালে শুরু হয় এরপর ২০২০সালের মার্চের দ্বিতীয়ার্ধে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দশক পর্যন্ত দেড় বছরেরও অধিক সময় সকল বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। যদিও বিদ্যালয় বন্ধকালীন সময়ে বিকল্প পদ্ধতিতে লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা ও অব্যাহত ছিল। জাতীয় সংসদ টেলিভিশন এবং অনলাইনে পাঠদানের পাশাপাশি এসাইনমেন্ট ও ওয়ার্কশীটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বইমুখী করার প্রয়াস লক্ষ ও করা যা গেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনের সিকিভাগও পূরণ করতে পারেনি।
করোনা মহামারীর কারণে এবারও নতুন বছরে সারাদেশে বই উৎসব করা সম্ভব হবে না। তবে সবসময় করা রীতি অনুযায়ী ২০২২ সালের শিক্ষাবর্ষের জন্য নতুন বছরের প্রথম দিন বই দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ছাএ ছাএীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ' পাঠ্যপুস্তক উৎসব ' উদ্বোধন করবেন। এবং পরদিন ১জানুয়ারী থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। তবে সব বিষয়ের শিক্ষার্থীদের একদিনে নতুন বই দেওয়া সম্ভব হবে না। একেক বিষয়ের শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে নতুন বই পাবে ।
জানা গেছে, গত ১৯ ডিসেম্বর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এক চিঠিতে মাধ্যমিক ও উউচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর কাছে তিন শিক্ষার্থীর তালিকা চেয়েছে । প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এই তিন শিক্ষার্থীর হাতেই বই তুলে দিবেন। 'পাঠ্যপুস্তক উৎসব 'এ চিঠিতে উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মোট তিন শিক্ষার্থীর ছবি, মোবাইল ফোন এর নম্বরসহ নামের তালিকা পাঠাতে বলা হয়। তবে মাধ্যমিক স্তরেের নবম শ্রেণি বাদে প্রতিশ্রেনীর থেকে একজন করে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেনীর এই তিনজনকে নেওয়া হবে।
তবে অন্যান্য বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে কিন্ডারগার্টেন স্কুল এর বই বছরের প্রথম দিন দিলেও আসছে নতুন বছর আর এক সঙ্গে বই পাবে না। নতুন শিক্ষাবর্ষের নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে বিনামূল্যের পাঠ্যবই পাচ্ছেনা বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলেের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী।
আসছে নতুন বছরে সরকারি প্রাথমিক সব বিদ্যালয়ের বই বিতরণ সম্পূর্ণ করার পর নতুন বই পাবে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর ১জানুয়ারী সরকারি এবং বেসরকারি সব ধরনের স্কুলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। তবে এবছর এর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ায় উদ্বিগ্ন সকল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মাঠ প্রশাসনে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন মোট এক কোটি শিক্ষার্থী আছে।এবং কিন্ডারগার্টেন এর শিক্ষার্থীরা ১০ জানুয়ারীর আগে কোনো বই পাবে না এমন নির্দেশনায় উপজেলা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তারাই লিখিত আকারে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিয়েছেন। এবং এ বিষয়ে অনেকে আবার মৈাখিক ভাবে কিন্ডারগার্টেন স্কুল কর্তৃপক্ষের বিষয়টি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এমন সিদ্ধান্তে কিন্ডারগার্টেন মালিকদের সংগঠন এবং ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এ দুটি সংগঠন এর নেতৃবৃন্দ জানান, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের লিখিত নোটিশ দিয়ে বই না দেওয়ার ঘোষণা রীতিমতো অন্যায় ও অবিচার। কিন্ডারগার্টেন এর কোমলমতি শিশুদের এভাবে নতুন বইয়ের উৎসব থেকে বঞ্চিত কোনোক্রমেই উচিৎ হবে না। সকল কিন্ডারগার্টেন স্কুল এর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার দাবি জানান।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা শিক্ষা অফিসার মোসা. জেসমিন আক্তার বানু স্বাক্ষরিত নোটিশে জানানো হয়, ২০২২ সালে নতুন বছরের আগামী ১০ জানুয়ারীর আগে কোনো কিন্ডারগার্টেন স্কুলে বিনামূল্যের বই দেওয়া হবে না। ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসের বরাত দিয়ে তিনি - আরও বলেন, নতুন বছরের ১ম জানুয়ারী শুধু সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যের বই বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানা শিক্ষা অফিসার মোসা.জেসমিন আক্তার বানু ২২ ডিসেম্বর বুধবার এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যম কে বলেন, আমি শুধু জেলা শিক্ষা অফিসের সিদ্ধান্তের বার্তা দিয়েছি।
তবে চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব জেলায় - উপজেলায় নতুন বই সরবরাহের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড( এনসিটিবির) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বই বিতরণ বিবরনী শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীর বিনামূল্যের পাঠ্যবই উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে শতকরা ৮১ ভাগ।এবং একই সঙ্গে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ও বই বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ আর প্রাক - প্রাথমিক এর বই বিতরণ করা হয়েছে মাএ ৫০ শতাংশ।
তবে বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র - নৃগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য ও বই বিতরণ করা হয়েছে শতভাগ।।
0 Comments