আবারো যেন পুরো বিশ্ব শেষ করার জন্য চলে আসছে "ওমিক্রন "।
বর্তবানে ওমিক্রন আতঙ্ক যেন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর যাবত মানুষের মৃত্যুর হাড় যেন বেড়েই চলেছে। ছোট- বড় সকলকেই নিয়ে যেন এক আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো বিশ্ববাসীর মাঝে। আবারো যদি পুরো বিশ্বে করোনা ভাইরাসের মতো ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়তে থাকে তাহলে বিশ্ববাসী ওমিক্রন ভাইরাস এর কাছে নিঃশ্ব হয়ে যাবে। এমনিতেই গত দুই বছর যাবত করোনা ভাইরাসে কাছের মানুষের মৃত্যুর কষ্ট এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। যার আপনজনকে হারায় সেই হাড়ানোর কষ্ট বুঝে। শুধু আপনজনকে হারানোর কষ্ট নয় এছাড়াও পুরো বিশ্বকে উলোটপালোট করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। বদলে গেছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা। আর্থিক অবস্থার ও অবনতি ঘটেছে। ব্যবসায়ীক কাজও আর আগের মতো নেই। তেমনি যদি ওমিক্রনের বীস্তার দ্রুত ঘটায় তাহলে বিশ্ববাসী একেবারেই ভেঙে পরবে।
বর্তমানে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন সংক্রমণের ভেরিয়েন্ট এনিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে মানুষ। ইতিমধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ গুলোই লকডাউনের মতো পরিস্থিতিতে পরছে। খুব দ্রুত সাবধানতার অবলম্বন করছে বিশ্ব নেতারা। কিভাবে ওমিক্রন এর মতো সংক্রমনের থেকে ভালো থাকা যায়।
ইতিমধ্যেই ভারতের বা পশ্চিমবঙ্গের সবরকম কার্যকলাপে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, এর সাথে স্কুল, কলেজ বন্ধের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এবার বাংলাদেশেও করোনার ওমিক্রন সংক্রমনের বীস্তার ছড়িয়ে পড়ার তথ্য রয়েছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশেও করোনার ওমিক্রন ভাইরাসের পরিস্থিতি নাজুক অবস্থা হতে পারে। এখনো অনেকেই যানেনা করোনার ভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট কোন কোন লক্ষণে গন্য করা হয়।
নিচে উল্লেখ করা হলো করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট এর উপসর্গ গুলো। নিচের উপসর্গ গুলো করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন আক্রমণ করলে শরীরের এমন সব পরিবর্তন আসতে পারে, এর আগে আপনি সহজেই এতটা দুর্বল ও অসুস্থ হননি। যদিও সারাবিশ্বে এখনো এই করোনার ওমিক্রন এর প্রকৃত সকল লক্ষণ গুলো পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
১। করোনার ওমিক্রন এর কারণে ভেরিয়েন্ট রোগীর শরীরের মধ্যে চরম দুর্বলতা আনবে। এটা হলো ওমিক্রন এর লক্ষণ। এবং তীব্র দুর্বল অনুভব করবে এই ওমিক্রন রোগী। তাদের পুরো শরীর চরম দুর্বলতায় নিঃস্ব করে ফেলবে। তাদের সারাদিন কোনো কাজ করার আগ্রহ থাকবেনা। তাদের সারাদিন কিছু না করে শুধু শুয়ে থাকতে মন চাইবে। ঘরের বা বাইরের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ গুলোও করতে মন চায় না। ছোট - বড় যেকোনো বয়সের মানুষ করোনার ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে এ ধরনের তীব্র দুর্বলতায় ভোগে রোগীরা। ৷ কয়েক দিন পর সময়ের সাথে সাথে করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট রোগী দুর্বলতার এমন পর্যায়ে পৌছায় যে রোগী আর বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারবে না।
২। " scratchy throat " করেনার ওমিক্রণ ভেরিয়েন্ট এর প্রধান উপসর্গ। এই " scratchy throat " এর কারণে করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট রোগীর গলার ভিতরে অস্বস্তিকর চুলকানি অনুভব করে।এবং সবসময় রোগীর মনে হয় গলার ভিতরে হাত দিয়ে একটু আরাম করে যদি চুলকাতে পারতো তাহলে বেশ শান্তি পাওয়া যেত। করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের এটাই প্রধান লক্ষণ ।
৩। রোগীর স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি জ্বর হওয়া।
৪। শরীরের ব্যাথা ও মাথা প্রচন্ড যন্ত্রণা করা।
৫। মাথা ঘোরা ও তীব্র মাথা ব্যাথা।
৬। শরীরের পেশি ব্যাথা ও শুকনো কাশি হওয়া।
৭। পালস রেট বেড়ে যায়।
এসব লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো রোগীর মধ্যে দেখা যায় তাহলে ঐ ব্যাক্তি ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট রোগী।
বাংলাদেশে ও করোনার ওমিক্রন দেখা যাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সাবধানতার বেশ তোরজোড় আসছে। বিষয়টি নিয়ে সবাই খুব চিন্তিত। গত সপ্তাহে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিলে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রনের আক্রমণ নিয়ে এক সভায় বসেন। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেই বৈঠকে নানান ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপার নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সেই সভায় বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা লক্ষ করছি যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে। এবং যেভাবে বাড়ছে সেটা খুবই আশঙ্কাজনক। আমরা সেই চিন্তা ভাবনা করেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে মিটিং করেছি। সেই মিটিংয়ে আমি ছিলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ছিলেন, সচিবরা ছিলেন, বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন, ডিসি, এসপি, ডিআইজিরা সবাই যুক্ত ছিলেন। এবং তাদের করা কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো এখন পর্যন্ত ফাইনাল না। ক্যাবিনেট থেকে ফাইনাল হওয়ার পর চিঠিটা যাবে সবার কাছে।
ওই সভায় আলোচনার সূত্র ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো বলেন, করোনা ভাইরাস ও ওমিক্রন এর সংক্রমণে আমাদের রুখতে হবে। সেই জন্য কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এবং যানবাহনে মাস্ক ছাড়া চলাচল করা যাবে না। যদি কেউ বাস, ট্রেন, লঞ্চ অথবা দৈনন্দিন যানবাহনে মাস্ক ছাড়া চলাচল করে তাহলে সে জরিমানায় পড়বে। এই বিষয়টি নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত মুটামুটি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বাস ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের যাএী সংখ্যা অর্ধেক করার জন্য পরিবহনে প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু যানবাহনে চলাচলের জন্য মাস্ক নয় বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে মাস্ক পড়ে যেতে হবে। যদি কেউ মাস্ক না পড়ে যায় তবে দোকানদারের জরিমানা হবে এবং যে যাবে তার ও জরিমানা হবে। শপিংমল, দোকান ও মার্কেট খোলা রাখার সময়সীমা কমিয়ে আনা হবে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, রাত ১০টার পরিবর্তে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। এটাও প্রস্তাব করা হয়েছে সভায়। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে দেশবাসীকে।
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, হোটেল বা রেস্টুরেন্টে খেতে হলে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার টিকার কার্ড দেখাতে হবে। মাস্ক পড়ে যেতে হবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত স্কুল - কলেজ চলবে ঠিকমতো। যদি সংক্রমন বেশি বৃদ্ধি পায় তবে সেই বিষয়ে পরবর্তিতে আলোচনা করা হবে। যদি করোনার সংক্রমন বেশি বৃদ্ধি তাহলে স্কুল - কলেজ খোলা রাখা যাবে না। স্কুল - কলেজ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সেপরিমান সংক্রমনের পরিস্থিতি দেশে বিরাজ করছে না।
0 Comments